হরিতকির উপকারিতা - হরিতকির উপকারিতা ও অপকারিতা
প্রিয় পাঠক আজকের আর্টিকেলে হরিতকির উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে আলোচনা করব। আপনারা অনেকে এ বিষয়ে জানতে চান। আজকের এই আর্টিকেলটি পড়ে জানতে পারবেন হরিতকির উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে।
আপনি যদি শেষ পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে থাকেন তাহলে এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন। চলুন তাহলে দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক হরিতকির উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে।
পেজ সূচিপত্রঃ হরিতকির উপকারিতা ও অপকারিতা
ভূমিকা
হরিতকি একটি ভেষজ উদ্ভিদ। ভারতবর্ষে বিভিন্ন স্থানে একটি পাওয়া যায়। বাংলাদেশের ঢাকা, চট্টগ্রাম ও টাঙ্গাইল প্রভৃতি স্থানে বেশি পাওয়া যায়।হরিতকি ফল বিভিন্ন রোগের চিকিৎসায় এবং রংধন শিল্পে বহুল ব্যবহৃত ভেষজ ফল। হরিতকির গাছ সচরাচর ৪০/৫০ ফুট উঁচু হয়। এর পাতাগুলো গোলাকার ডিমের মতো তবে কিছুটা লম্বাটে।
হরিতকি দু'রকমের হয়ে থাকে অপক্ক ও পরিপক্কা। হরিতকির যেমন উপকারিতা রয়েছে তেমন অপকারিতা ও রয়েছে। আশা করি আপনি আজকের এই আর্টিকেল পড়ে খুব সহজে বুঝতে পারবেন হরিতকির উপকারিতা - হরিতকির উপকারিতা ও হরিতকির অপকারিতা সম্পর্কে। চলুন তাহলে আর দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক হরিতকির উপকারিতা ও হরিতকির অপকারিতা সম্পর্কে সকল প্রকার তথ্য বিস্তারিতভাবে।
হরিতকির উপকারিতা
আয়ুর্বেদিক বিজ্ঞানে ত্রিফলা নামে পরিচিত তিনটি ফলের একটি হরিতকি। এর নানা গুণ আছে। সাদ তিতা। এটি ট্যানিন, অ্যামাইনো এসিড ও বিটা সাইটোস্টেবল সমৃদ্ধ। হরতকি দেহের অন্ত্র পরিস্কার করে এবং একই সঙ্গে দেহের শক্তি বৃদ্ধি করে। এটা রক্তচাপ ও অন্ত্রের খিচুনি কমায়। হরতকি কোষ্ঠকাঠিন্য, স্নায়ুবিক দুর্বলতা, অবসাদ এবং অধিক ওজনের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়।
চলুন জেনে নেওয়া যাক হরিতকের আরো কিছু উপকারিতা:
- হরিতকিতে অ্যান্থ্রাইকুইনন থাকার কারণে রেচক বৈশিষ্ট্য সমৃদ্ধ। আর তাই হরিতকি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। এলার্জি দূর করতে বিশেষ উপকারী।
- হরিতকি ফুটিয়েছে পানি খেলে এলার্জি কমে যায়।
- হরিতকির গুঁড়া নারিকেল তেলের সঙ্গে ফুটিয়ে মাথায় লাগালে চুল ভালো থাকবে।
- হরিতকির গুঁড়া পানিতে মিশিয়ে খেলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়বে।
- গলা ব্যথা বা মুখ ফুলে গেলে হরিতকি পানিতে ফুটিয়ে সেই পানি দিয়ে গার্গল করলে আরাম পাবেন।
- দাঁতে ব্যথা হলে হরিতকি গুঁড়া লাগান, ব্যাথা দূর হবে।
- রাতে শোয়ার আগে অল্প বিট লবণ এর সঙ্গে ২ গ্রাম লবঙ্গ বা দারচিনির সঙ্গে হরিতকির গুঁড়া মিশিয়ে খান। পেট পরিষ্কার থাকবে।
হরিতকির উপকারিতা ও হরিতকির অপকারিতা
আমাদের আজকের এ সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি হচ্ছে হরিতকির উপকারিতা ও হরিতকির অপকারিতা এই সম্পর্কে। আমাদের প্রাচীন আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে হরিতকিকে খুবই মূল্যবান একটি ভেষজের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। বলতে পারেন পায়ের নখ থেকে মাথার চুল পর্যন্ত সব সমস্যার জন্য রয়েছে এই হরিতকি। হরিতক এর মধ্যে থাকে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন, সেলেনিয়াম, কপারের মত খনিজ। চলুন জেনে নেওয়া যাক হরিতকির উপকারিতা ও হরিতকির অপকারিতা সম্পর্কে।
হরিতকির উপকারিতা:
- হরিতকিতে অ্যান্থ্রাইকুইনন থাকার কারণে রেচক বৈশিষ্ট্য সমৃদ্ধ। আর তাই হরিতকি কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। এলার্জি দূর করতে বিশেষ উপকারী।
- হরিতকি ফুটিয়েছে পানি খেলে এলার্জি কমে যায়।
- হরিতকির গুঁড়া নারিকেল তেলের সঙ্গে ফুটিয়ে মাথায় লাগালে চুল ভালো থাকবে।
- হরিতকির গুঁড়া পানিতে মিশিয়ে খেলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়বে।
- গলা ব্যথা বা মুখ ফুলে গেলে হরিতকি পানিতে ফুটিয়ে সেই পানি দিয়ে গার্গল করলে আরাম পাবেন।
হরিতকির অপকারিতা:
- হরিতকি খুব বেশি পরিমাণে খেলে আপনার ঠান্ডা লেগে যেতে পারে। খুব বেশি পরিমাণে আর রোজ যদি হরিতকি খান তাহলে সর্দি-কাশি কমার বদলে বরং বেড়ে যেতে পারে।
- গর্ভাবস্থায় হরিতকি খাওয়া একদমই উচিত নয়। হরিতকি খাওয়ার পর অল্প উষ্ণ জল না খেলে সে হরিতকি সহজে হজম হতে চাই না। তখন আবার হজম না হওয়া হরিতকি বিপরীত ফল দিতে শুরু করে। তাই বারবার করে বলা হয়েছে হরিতকি যেকোন রূপে খাবার পরে অল্প উষ্ণ জল খেয়ে নিতে হবে।
- আর হরিতকি কখনোই শুধু শুধু কোন কাটা বা আঘাত লাগা জায়গায় দিতে নেই। সব সময় অন্য কিছু খুব ভালো হয় অল্প নারিকেল তেল সহযোগে যদি সেই আঘাত লাগা জায়গায় ব্যবহার করা যায়।
- মূল কথা হল বেশি পরিমাণে হরিতকী ব্যবহার করা আসলে খারাপ। সব সময় পরিমাণ ঠিক রেখে অল্প করে বেশ টানা কিছুদিন হরিতকি ব্যবহার করলে তবে উপকার পাওয়া যাবে।
- উপকার পাওয়ার জন্য একবারে অনেকটা ব্যবহার করলে লাভের বদলে ক্ষতি হবে বেশি।
আরো পড়ুনঃ মানসিক রোগ থেকে মুক্তির দোয়া
আশা করে তাহলে বুঝতে পেরেছেন হরিতকির উপকারিতা - হরিতকির উপকারিতা ও হরিতকির অপকারিতা সম্পর্কে।
হরিতকি খাওয়ার নিয়ম
হরিতকির উপকারিতা - হরিতকির উপকারিতা ও হরিতকির অপকারিতা সম্পর্কে আমরা জেনেছি। এবার জানব হরিতকি খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে।
- গরমের সময়ে হরিতকি খেলে অল্প গুড় মিশিয়ে খান।
- আবার বর্ষার সময় হরিতকি শরবতের চিনির সঙ্গে খেলে ভালো উপকার পাবেন।
- শীতের শুরুতে অল্প আদা কুচি আর শীতের মধ্যে অল্প গোলমরিচ দিয়ে হরিতকি খেতে পারেন।
- আর বসন্তকালে মধু দিয়ে হরিতোকি খাওয়ার সবচেয়ে উপকারী।
হরিতকির দাম
স্থানভেদে ও গঠন ও আকৃতি ভেদে এক একটি হরিতকির দাম ভিন্ন হয়। আবার সময়ের উপর ভিত্তি করেও এর দাম ওপর নিচ হয়ে থাকে। তাই নির্দিষ্ট করে কোন কিছুর দাম বলা যায় না। হরিতকির উপকারিতার কারণে এর চাহিদাও অনেক। চাহিদার উপর ভিত্তি করেও দাম নির্ধারণ করে থাকে বিক্রেতা। বিভিন্ন দোকানে বিভিন্ন রকমের দাম দেখা যায়। এটি ওষুধের কাজে ব্যবহার হয়ে থাকে বলে এর দামটাও একটু বেশি।
আরো পড়ুনঃ কিডনির সমস্যা হলে কি খাওয়া উচিত
সঠিকভাবে দাম বলা সম্ভব না তাই কিছু ধারনামূলক দাম দেওয়া হল-
- ১ কেজি ৪২০ টাকা।
- ৫০০ গ্রাম ২১৫ টাকা।
- ২৫০ গ্রাম ১১৫ টাকা।
- ১০০ গ্রাম ৫৫ টাকা।
- ৫০ গ্রাম ৩০ টাকা।
- ২৫ গ্রাম ২০ টাকা।
হরিতকির আপকারিতা
হরিতকির উপকারিতা ও হরিতকির অপকারিতা সম্পর্কে আমরা প্রায় জানার চেষ্টা করে থাকি। সব কিছুরই একটি উপকারিতা ও অপকারিতা রয়েছে। উপকারিতা সম্পর্কে আমরা ইতিমধ্যে জেনেছি। চলুন তাহলে এবার জেনে নেওয়া যাক হরিতকির অপকারিতা সম্পর্কে।
হরিতকির অপকারিতা:
- হরিতকি খুব বেশি পরিমাণে খেলে আপনার ঠান্ডা লেগে যেতে পারে। খুব বেশি পরিমাণে আর রোজ যদি হরিতকি খান তাহলে সর্দি-কাশি কমার বদলে বরং বেড়ে যেতে পারে।
- গর্ভাবস্থায় হরিতকি খাওয়া একদমই উচিত নয়। হরিতকি খাওয়ার পর অল্প উষ্ণ জল না খেলে সে হরিতকি সহজে হজম হতে চাই না। তখন আবার হজম না হওয়া হরিতকি বিপরীত ফল দিতে শুরু করে। তাই বারবার করে বলা হয়েছে হরিতকি যেকোন রূপে খাবার পরে অল্প উষ্ণ জল খেয়ে নিতে হবে।
- আর হরিতকি কখনোই শুধু শুধু কোন কাটা বা আঘাত লাগা জায়গায় দিতে নেই। সব সময় অন্য কিছু খুব ভালো হয় অল্প নারিকেল তেল সহযোগে যদি সেই আঘাত লাগা জায়গায় ব্যবহার করা যায়।
- মূল কথা হল বেশি পরিমাণে হরিতকী ব্যবহার করা আসলে খারাপ। সব সময় পরিমাণ ঠিক রেখে অল্প করে বেশ টানা কিছুদিন হরিতকি ব্যবহার করলে তবে উপকার পাওয়া যাবে।
- উপকার পাওয়ার জন্য একবারে অনেকটা ব্যবহার করলে লাভের বদলে ক্ষতি হবে বেশি।
হরিতকি-মোরব্বার প্রস্তুত প্রণালী
হরিতকির ফল-বীজ-পাতা সবকিছুই উপকারী। রোগ প্রতিরোধে প্রতিষেধক হিসেবে বিশেষ করে ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গাস জনিত রোগের ক্ষেত্রে ভালো কাজ দেয়। ট্যানিন,অ্যামাইনো অ্যাসিড, এবং সাইটোস্টেরল-সমৃদ্ধ হরিতকির দেহের রক্ত পরিষ্কার ও শক্তি বৃদ্ধি করে এবং রক্তচাপ ও অন্ত্রের খিচুনি কমায়। চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক হরিতকি-মোরব্বার সম্পূর্ণ প্রস্তুত প্রণালী।
কাঁচা হরিতকি গুলোকে ভালো করে পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে নিতে হবে। তারপর লোহা বা অন্য ধাতু বা কাঁঠালের শলাকা দিয়ে হরিতকি গুলোকে একে একে ভালো করে সিদ্ধ করতে হবে। পরপর পাঁচবার গরম পানিতে সিদ্ধ করে গরম পানি ফেলে দিতে হবে; ফলে হরিতকির কষ বেরিয়ে যাবে। তারপর চিনির প্রস্তুত রসে হরিতকি গুলো জাল দিতে হবে। এরপর কয়েকদিন চিনির রসে হরিতকি গুলো রেখে দিলে সুন্দর হরিতকি-মোরব্বা তৈরি হয়ে যাবে।
কত শ্রেণীর হরিতকি দেখা যায়
ইতিমধ্যে আমরা জেনেছি হরিতকির উপকারিতা ও হরিতকির অপকারিতা সম্পর্কে। কত শ্রেণীর হরিতকি দেখা যায়। বাংলাদেশে অনেক শ্রেণীর হরিতকি দেখা যায়, তার মধ্যে বিশেষভাবে সাতটি শ্রেণি উল্লেখযোগ্য। এ গাছের গঠন ও আকৃতি দেখে উদ্ভিদ বিজ্ঞানীরা শ্রেণীবিভাগ করেছেন। চলুন এবার জেনে নেওয়া যাক সেই সাতটি হরিতকর নাম।
- চেতকী- এ হরিতকি দেখতে খুবই ছোট ও গাছটির শিরার সংখ্যা তিন।
- জাবন্তী- এ হরিতকি খুব ছোটও না আবার বেশি বড় নয়। হরিতকি গায়ে তিনটি শিরা থাকে।
- অমৃতা- ভেতরটা শাসে ভরা এবং বীজের আকার ছোট হয়।
- রোহিনী- এ হরিতকির আকার সম্পূর্ণ গোল।
- বিজয়া- হরিতকির দেখতে গোল লাউ এর মত।
- পুতনার- আগের দুটির তুলনায় আকৃতিতে বেশ ছোট কিন্তু বীজের আকৃতি বড় হয়।
- অভয়া- দেখতে ছোট হলেও ওজনে বেশ ভারী। গায়ের শিরা গুলো বেশ সুস্পষ্ট এবং পাঁচটি শিরা ভালোভাবে বোঝা যায়।
হরিতকি সেবন ভেদে এর গুনাগুন
এতক্ষণ আমরা জানলাম হরিতকির উপকারিতা - হরিতকির উপকারিতা ও হরিতকির অপকারিতা সম্পর্কে। এবার আমরা জানবো হরিতকি সেবন ভেদে এর গুনাগুন সম্পর্কে। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক।
আরো পড়ুনঃ বাচ্চাদের টিকা দেওয়ার পর কি করবেন
সেবন ভেদে এর গুনাগুন ভিন্ন হয়-
- চিবিয়ে খেলে অগ্নিবৃদ্ধি হয়।
- পিষে সেবন করলে মন শোধিত হয়।
- সিদ্ধ করে খেলে মল সংগ্রহ করে।
- ভেজে খেলে ত্রিদশোনাস হয়।
- অন্যদিকে আহারের সাথে খেলে বল, বুদ্ধি ও ইন্দ্রিয়ের বিকাশ হয়।
- আর খাওয়ার শেষে হরিতকি খেলে বায়ু, পিত্ত জনিত বিরা সমূহ নির্বাহিত হয়।
উপসংহার
হরিতকি তে অ্যান্থাইকুইনন থাকার কারণে রেচক বৈশিষ্ট্য সমৃদ্ধ, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে হরিতকি।এলার্জি দূর করতে বিশেষ উপকারী। হরিতকি পানিতে ফুটিয়ে সেই পানি খেলে শরীরের এলার্জি কমতে সাহায্য করে। হরিতকির গুড়া পানিতে মিশিয়ে খেলে ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ে। সব জিনিসের উপকারিতা ও অপকারিতা দুইটিই রয়েছে। তাই আমাদের নিয়মের ভেতরের সবকিছু খেতে হবে। নিয়মের ভেতরের হরিতকি সেবন করলে কোন প্রকার ক্ষতি হবে না।
আশা করি আপনারা আজকের এই আর্টিকেল পড়ে বুঝতে পারবেন হরিতকির উপকারিতা - হরিতকির উপকারিতা ও হরিতকির অপকারিতা সম্পর্কে। এমন সুন্দর সুন্দর টিপস পেতে আমাদের ওয়েবসাইট অর্ডিনারি আইটি ভিজিট করতে পারেন। আর্টিকেলটি সম্পন্ন করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। ২৪১৪২
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url